রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তারেক মাহমুদ আবীরকে ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক পদ থেকে আকস্মিক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তিনি ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট এই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
তার সঙ্গে একই শর্তে প্রক্টর, লাইব্রেরি এবং টিএসসিসহ চারটি দপ্তরের আরও তিনজন শিক্ষককে পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ২১ আগস্ট শুধু তাকেই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তারেক মাহমুদকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ৫ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ এর গ্রাউন্ড ফ্লোরে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে একটি প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নেন।
প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোহাগ রবি বলেন, আজকের এই মানবন্ধনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, সাধারণ শিক্ষার্থীরা একজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষকের পাশে রয়েছে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সত্যের পক্ষে রয়েছে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তারুণ্যের পক্ষে রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি খুব দ্রুতই প্রশাসন ড. তারেক মাহমুদ স্যারের বিরুদ্ধে করা অব্যাহতি আদেশ ফিরিয়ে নেবে।
শিক্ষার্থী নেওয়াজ শরীফ বলেন, তারেক মাহমুদ স্যার শিক্ষার্থীদের সমস্যা এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারে না। আমি আশা করি, খুব শিগগিরই অব্যাহতির আদেশ ফিরিযে নেবে প্রশাসন এবং স্যারকে পুনরায় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক পদে নিযুক্ত করা হোক। এর ব্যত্যয় ঘটলে আন্দোলন শুরু হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক ড. তারেক মাহমুদ আবীর জানান, অব্যাহতির কয়েকদিন আগে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন তাকে নিজ দপ্তরে ডেকে এনে জানিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি একাধিক পদে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরাও একাধিক পদে দায়িত্ব পালন করছেন বলে উপাচার্যকে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান উপাচার্য মহোদয়ের আমলেই একই ব্যক্তিকে দুটি থেকে তিনটি দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার অব্যাহতির পর যিনি বর্তমানে ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনিও আরও কয়েকটি দপ্তরের দায়িত্ব পালন করছেন। এরপরও আমাকে না জানিয়ে বা কোনো নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এভাবে অব্যাহতি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে এই শিক্ষক অভিযোগ করেন, সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানতে চাইলে তিনি যা সত্য তাই বলেছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। এভাবে কাজ করতে গিয়ে হয়তো তিনি কারো বিরাগভাজন হয়েছেন বলেই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ছাদেকুল আরেফিনের মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া মেলেনি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে তিনি আগে থেকে কিছু জানতেন না। নোটিশের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জেনেছেন।